চকরিয়ায় সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান দিদারের বিরুদ্ধে নারী নির্যাতন মামলা

কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার কোনাখালী ইউনিয়নের সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি দিদার সিকদারের বিরুদ্ধে নারীকে প্রকাশ্যে নির্যাতনের অভিযোগে মামলা হয়েছে।
রোববার (৩১ আগস্ট) ভুক্তভোগী গৃহবধূ জোবাইদা বেগম নিজেই চকরিয়া উপজেলা সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলাটি দায়ের করেন।
জোবাইদা বেগম কোনাখালী ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের বাংলাবাজার খাসপাড়া গ্রামের শামসুল আলমের মেয়ে এবং একই এলাকার মোবারকের স্ত্রী।
জোবাইদা বেগম জানান, তার স্বামী মোবারক উরফে মাইকেল পেশায় একজন জেলে এবং দিনমজুরের কাজও করেন। পরিশ্রমের টাকায় ও ধার-দেনা করে একটি ছোট পরিসরে গরুর খামার শুরু করেন। ওই খামারে দিদার চেয়ারম্যানের লালিত দা বাহিনী গিয়ে ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করে। চাঁদা না দেয়ায় দিদার চেয়ারম্যান বিভিন্ন সময়ে হুমকি দিয়ে আসছিলেন।
জোবাইদা অভিযোগ করেন, গত ২৫ আগস্ট রাতে তার স্বামী বাড়িতে না থাকায় দিদার ও তার দা বাহিনী বাড়ির দরজা ভেঙে প্রবেশ করে টাকা দাবি করে। টাকা না দিলে রুমের আসবাপত্র উলটপালট করতে থাকে। তিনি বাধা দিলে দিদার চেয়ারম্যান ও সন্ত্রাসী লাখী ওরফে লাউক্কা গাছের বাটাম দিয়ে তাকে এলোপাতাড়ি মারধর করে।
জোবাইদা আরো জানান, তার চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এলে দিদারের বাহিনীর সদস্যরা তার হাতে চার পিস ইয়াবা ধরিয়ে দেয়। পরে তাকে ইয়াবা বিক্রেতা হিসেবে তকমা দিয়ে দিদারের আস্তানায় নিয়ে তিন ঘণ্টা আটকে রাখা হয়। আটক অবস্থায় তিনি অসুস্থ হয়ে পড়লে দিদার তাকে বাড়িতে রেখে চলে যান।
জোবাইদার স্বামী মোবারক জানান, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে চেয়ারম্যান থাকাকালে দিদার তার মতের বিরুদ্ধে গেলে দা বাহিনী দিয়ে মানুষকে নির্যাতন করতেন। ৫ আগস্ট আওয়ামী সরকার পরিবর্তনের পর তাকে পদ থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়। বর্তমানে তিনি বাংলাবাজারে তার বাংলোতে অবস্থান করে নানা অবৈধ কর্মকাণ্ড চালাচ্ছেন। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় না থাকলেও তার দাদাগিরি এখনো এলাকায় চলছে বলে অভিযোগ করেন মোবারক।
তিনি জানান, তার স্ত্রীকে প্রকাশ্যে পিটিয়ে আহত করা হয়েছে এবং হাসপাতালে যেতে দেয়া হয়নি দুই দিন। পরে চোখ ফাঁকি দিয়ে চিকিৎসা করিয়ে মামলা করেছেন। মামলার পর থেকে তারা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন।
এ বিষয়ে দিদার চেয়ারম্যানের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ওই মহিলা একজন ইয়াবা ব্যবসায়ী। তবে মারধরের অভিযোগ অস্বীকার করেন। যদিও মারধরের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।
আপনার মতামত লিখুন