টেকনাফের অপহরণ ও সন্ত্রাস চক্রের দুই ভাই গ্রেপ্তার, এলাকাবাসীর স্বস্তি 

নিজস্ব প্রতিবেদক:
প্রকাশ: ১৬ মে, ২০২৫, ২:৫১
টেকনাফের অপহরণ ও সন্ত্রাস চক্রের দুই ভাই গ্রেপ্তার, এলাকাবাসীর স্বস্তি 

কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার বাহারছড়া ইউনিয়নের মারিশ বনিয়া গ্রামে দীর্ঘদিন ধরে ত্রাস সৃষ্টি করে আসা চিহ্নিত সন্ত্রাসী রাসেল ও তার বড় ভাই আতিক উল্লাহ অবশেষে র‌্যাবের জালে আটক হয়েছে।

গতরাত আনুমানিক ২টার দিকে র‌্যাবেরা সদস্য গোপন সংবাদের ভিত্তিতে একটি পাহাড়ি আস্তানায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। এই ঘটনায় এলাকাবাসীর মাঝে স্বস্তি ফিরে এসেছে।

গ্রেফতারকৃত রাসেল বিএনপির বাহারছড়া ইউনিয়ন দক্ষিণ শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক ছিদ্দিক আহমদ ওরফে কসাই ছিদ্দিকের ছেলে। কসাই ছিদ্দিক নিজেও দীর্ঘদিন ধরে অবৈধ দলীয় প্রভাব খাটিয়ে সাধারণ মানুষকে ভয়ভীতি ও জুলুমের মাধ্যমে চুপ করিয়ে রেখে একের পর এক অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছিলেন। তার ছেলেদের দিয়ে তিনি গড়ে তুলেছিলেন একটি অপরাধ সাম্রাজ্য, যার শাখা বিস্তৃত মাদক, মানব পাচার, অপহরণ, চোরাচালান, গরু চুরি, জমি দখল, অস্ত্রের মহড়া থেকে শুরু করে রাজনৈতিক দখলবাজিতে পরিনত হয়েছে।

এদিকে গরু চুরি ও নিরপরাধ ব্যক্তিদের ফাঁসানো সাম্প্রতিক সময়ে সিদ্দিকের পরিবার এবং  স্থানীয় নুরুল আমিনের ছেলে জামাল উদ্দিন এবং নুর কামাল মিলে নিরিহ মৌলভী গফুরের একটি গরু চুরি করে।

চুরির ঘটনার পর গরুটি ধরা পড়লেও, তারা নিজেদের বাঁচাতে নিরপরাধ কয়েকজনকে জড়িয়ে দেয়। ওই নিরীহ ব্যক্তিরা বর্তমানে জেল হাজতে বন্দি। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকায় সৃষ্টি হয় উত্তেজনা ও সংঘর্ষ, যেখানে তিনজন আহত হন এবং একজন এখনও মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করছেন।

ইয়াবা ব্যবসা ও তরুণদের বিপথগামী করা সিদ্দিকের পরিবার এলাকার যুব সমাজকে ধ্বংসের পথে ঠেলে দিয়েছে।

তাদের বৈধ কোন আয় না থাকা সত্ত্বেও রাসেল কীভাবে দালান বড়িসহ লাখ লাখ টাকার বাইক নিয়ে রাজার হালতে চলে।

দলীয় প্রভাব ও ‘একক আধিপত্য’ বিস্তার করে ছিদ্দিক আহমদ ওরফে কসাই ছিদ্দিক রাজনৈতিক পরিচয় ব্যবহার করে এলাকায় নিজের মত করে ‘বিচার-সালিশ’, দখল বাণিজ্য ও সিন্ডিকেট চালাচ্ছেন।

পারিবারিক দ্বন্দ্বেও অপরাধ এমনকি নিজের আপন ছোট ভাই প্রবাসী জাকের আহমদের বাড়িতেও ডাকাতি করে লুটপাট চালিয়েছে এই পরিবার। যেটি থানা অবগত রয়েছে।

এর আগেও রাসেলের বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন, অপহরণ, মানব পাচার (বিশেষ করে মালয়েশিয়ায়), মাদক ব্যবসা (প্রকাশ্যে ‘মাদক সম্রাট’ নামে পরিচিত), মিয়ানমার থেকে পণ্য চোরাচালান, গরু চুরি ও একাধিক মামলার অভিযোগ রয়েছে। তাকে এবং তার ভাইকে দলিয় প্রভাব কাজে লাগিয়ে আইনের বাইরে রাখার চেষ্টা চলছে।