রোহিঙ্গা ক্যাম্পে সিএনজি চলাচলে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতি
কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফ উপজেলার রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে সিএনজি চলাচলে ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, আরআরআরসি কর্তৃক সীমিতসংখ্যক সিএনজি চলাচলের অনুমতি থাকলেও বাস্তবে অনুমতিহীন বহু সিএনজি অবৈধভাবে ক্যাম্পের ভেতরে চলছে, যা নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে।
অনুমতি ৫৬, চলছে ১৩০টির বেশি সিএনজি
২০২২ সালের ২৭ জুলাই বিভাগীয় কমিশনারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত “বল প্রয়োগে বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা নাগরিকদের সমন্বয়, ব্যবস্থাপনা ও আইনশৃঙ্খলা সম্পর্কিত নির্বাহী কমিটির” ১৯ নম্বর সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আরআরআরসি প্রশাসন শর্তসাপেক্ষে উখিয়া ও টেকনাফের ৩৩টি রোহিঙ্গা ক্যাম্পে ৫৬টি সিএনজি/অটোরিকশা চলাচলের অনুমতি দেয়।
কিন্তু মাঠপর্যায়ে দেখা গেছে, ৮ ও ১৪ এপিবিএন এর আওতাধীন ক্যাম্পগুলোতে ১৩০টিরও বেশি সিএনজি অবৈধভাবে চলছে। প্রতিটি সিএনজি চালাতে মাসিক ৩০ থেকে ৩৫ হাজার টাকা পর্যন্ত ঘুষ দিতে হয় বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
তথ্য অনুযায়ী, অনেক রোহিঙ্গা অবৈধভাবে সিএনজি ক্রয় করে নিজেরাই ড্রাইভার হিসেবে ক্যাম্পে চালাচ্ছে। এমনকি কিছু বাঙালি নামধারী রোহিঙ্গা, যেমন ক্যাম্প-১২ এর বাসিন্দা আলম ও ইয়াছিন, যৌথভাবে ৯টি সিএনজি পরিচালনা করছে। এর মধ্যে আলমের ৩টি এবং ইয়াছিনের ৫টি সিএনজি ক্যাম্প-১১, ১২ ও ১৮ তে চলাচল করছে।
জানা গেছে, আলম স্থানীয় এক বাঙালি নারীকে বিয়ে করে তার পরিচয়ে ক্যাম্পে বসবাস করছে, তবে তার কোনো জাতীয় পরিচয়পত্র নেই।
ক্যাম্প-১১, ১২ ও ১৮: অনুমোদিত ১১টি, চলছে ২৯টি সিএনজি।
ক্যাম্প-৯ ও ১০: অনুমোদিত ২টি, চলছে ৯টি।
ক্যাম্প-১৯: অনুমোদিত ৩টি, চলছে ৯টি।
এর মধ্যে বহু সিএনজি রোহিঙ্গা ড্রাইভার দ্বারা পরিচালিত হচ্ছে বলে জানা গেছে।
১️⃣ আরআরআরসি অনুমোদনের কপি জাল করা।
২️⃣ মাসিক মাসোহারা বা ঘুষের মাধ্যমে অবৈধ চলাচলের অনুমতি।
৩️⃣ রোহিঙ্গা মালিক ও চালকের মাধ্যমে সিএনজি পরিচালনা।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, এইভাবে অবৈধ সিএনজি চলাচল চলতে থাকলে ক্যাম্পের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি আরও অবনতির আশঙ্কা রয়েছে।
একজন স্থানীয় জনপ্রতিনিধি বলেন,“যারা অবৈধভাবে ক্যাম্পে সিএনজি চালাচ্ছে, তাদের অধিকাংশই রোহিঙ্গা। পুলিশের কিছু সদস্য মাসোহারা নিচ্ছে—এটা এখন ওপেন সিক্রেট।”
আরআরআরসি দপ্তরের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, আমাদের অফিস থেকে নির্দিষ্ট সংখ্যক সিএনজির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। যদি এর বাইরে কেউ চালায়, সেটা সম্পূর্ণ অবৈধ। প্রশাসন বিষয়টি জানে, শিগগিরই অভিযান পরিচালনা করা হবে।


আপনার মতামত লিখুন