২০ মাসে ৩০ প্রাণহানি, যান্ত্রিক ত্রুটি আর অরক্ষিত ক্রসিংয়ে আতঙ্ক

ডেস্ক নিউজ
প্রকাশ: ১৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৫, ৬:৫৩
২০ মাসে ৩০ প্রাণহানি, যান্ত্রিক ত্রুটি আর অরক্ষিত ক্রসিংয়ে আতঙ্ক
চট্টগ্রাম–কক্সবাজার রেলপথে একের পর এক দুর্ঘটনায় আতঙ্কে যাত্রী ও স্থানীয়রা। ২০২৩ সালে উদ্বোধনের পর ২০ মাসে এই পথে অন্তত ৩০ জনের মৃত্যু হয়েছে। চলন্ত ট্রেনের বাফার ভাঙা, বগি বিচ্ছিন্নতা ও অরক্ষিত লেভেল ক্রসিংয়ের কারণে বড় দুর্ঘটনা বারবার ঘটছে, অথচ সুনির্দিষ্ট তদন্ত বা স্থায়ী সমাধান হয়নি।

রেলওয়ের মেকানিক্যাল বিভাগ ও স্থানীয়দের অভিযোগ, মূল সমস্যার মূলে রয়েছে রক্ষণাবেক্ষণের ঘাটতি এবং ক্ষতিগ্রস্ত যন্ত্রাংশের পুনর্ব্যবহার।

অকশনে বিক্রি হওয়া ড্যামেজ বাফার ও অন্যান্য পার্টস রং করে, সামান্য ঝালাই দিয়ে ‘নতুন’ নামে সরবরাহ করা হয়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা জানান, এই প্রক্রিয়া বহু বছর ধরে চলছে এবং সবাই জানলেও কেউ বাধা দেন না।গত কয়েক মাসে দুর্ঘটনার ধারাবাহিকতায় আতঙ্ক আরও বেড়েছে। ২ আগস্ট কক্সবাজারের রামুতে ট্রেনের ধাক্কায় অটোরিকশার পাঁচ যাত্রী নিহত হন।

এই ১০২ কিলোমিটার রুটে ৭২টি লেভেল ক্রসিংয়ের মধ্যে ৫৬টি সম্পূর্ণ অরক্ষিত।

পটিয়া স্টেশন মাস্টার রাশেদুল আলম পাভেল বলেন, “এগুলো মানুষের সৃষ্টি নয়, নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারের ফল। বাফার হুক যদি ভালো মানের হতো, এত দুর্ঘটনা ঘটত না।

স্থানীয় যাত্রী মামুন হোসেন বলেন, “ট্রেনের হুইসেল শুনলেই ভয় লাগে। অরক্ষিত ক্রসিংয়ে কোনো সতর্কতা নেই। প্রতিদিন মরার ভয়ে যাত্রা করতে হয়।” এক পর্যটক জানান, “বগি বিচ্ছিন্ন হলে আমরা আতঙ্কে কাঁপছিলাম। রেল কর্তৃপক্ষ শুধু ক্ষমা চায়, সমাধান করে না।”

বিশেষজ্ঞদের মতে, সব লেভেল ক্রসিং রক্ষিত করা, নতুন যন্ত্রাংশ ব্যবহার নিশ্চিত করা এবং নিয়মিত অডিট ছাড়া এ আতঙ্কের শেষ নেই। যাত্রীদের প্রশ্ন একটাই—আর কত প্রাণহানি হলে জবাবদিহি হবে?